ঢাকাবার্তা ডেস্ক ।।
সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের অভিযানে নেতৃত্ব দিয়েছে ইসলামপন্থী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস)। আজ রোববার, এই গোষ্ঠী এক বিবৃতিতে বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের ঘোষণা করেছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ‘জালিম শাসক বাশার আল-আসাদ দেশ থেকে পালিয়েছেন। সিরিয়া এখন মুক্ত। এটি একটি অন্ধকার যুগের সমাপ্তি এবং নতুন যুগের সূচনা।’
বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের পর হায়াত তাহরির আল-শাম (এইচটিএস) প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি বিশ্ব মিডিয়ায় আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা তাঁর অতীত ও বর্তমান কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে।
আবু মোহাম্মদ আল-জোলানির আসল নাম আহমেদ হুসাইন আল-শারা। তিনি ১৯৮২ সালে সৌদি আরবের রিয়াদে জন্মগ্রহণ করেন, যেখানে তাঁর বাবা পেট্রোলিয়াম প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৮৯ সালে তাঁর পরিবার সিরিয়ায় ফিরে আসে এবং দামেস্কে বসবাস শুরু করে।
২০০৩ সালে তিনি সিরিয়া থেকে ইরাক পাড়ি দিয়ে আল-কায়েদায় যোগ দেন। পরবর্তীতে, তিনি যুক্তরাষ্ট্রবিরোধী প্রতিরোধ আন্দোলনে যোগ দেন এবং ২০০৬ সালে গ্রেপ্তার হয়ে পাঁচ বছর আটক থাকেন।

বাশার আল-আসাদ
২০১১ সালে সিরিয়ায় শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের মধ্য দিয়ে গৃহযুদ্ধের সূচনা হলে, জোলানি আল-কায়েদার শাখা ‘আল-নুসরা ফ্রন্ট’ প্রতিষ্ঠা করেন। ২০১৩ সালে, তিনি আইএসআইএলের সঙ্গে সম্পর্কচ্ছেদ করেন এবং আল-কায়েদার সাথে সম্পর্ক বজায় রাখেন।
২০১৬ সালে তিনি ‘জাভাত ফাতেহ আল-শাম’ গঠন করেন, পরবর্তীতে ‘হায়াত তাহরির আল-শাম’ নামে নতুন গোষ্ঠী প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর গোষ্ঠী বর্তমানে সিরিয়ায় বাশার আল-আসাদ সরকারের পতনের প্রধান বাহিনী হিসেবে কাজ করছে।
এইচটিএসের মূল লক্ষ্য ছিল সিরিয়ার শাসক বাশার আল-আসাদকে উৎখাত করা এবং সিরিয়ায় ‘ইসলামী আইনের’ অধীনে শাসন প্রতিষ্ঠা করা। এছাড়া, তারা সিরিয়ায় ইরানী প্রভাবমুক্ত একটি শাসন ব্যবস্থা চায়।
বাশার আল-আসাদের পতনের পর, এইচটিএস ও এর প্রধান আবু মোহাম্মদ আল-জোলানি সিরিয়ার ভবিষ্যতের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছেন, যা আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক আলোচনা সৃষ্টি করেছে।