স্টাফ রিপোর্টার ।।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ইসলামপন্থী ৯টি দলের নেতারা প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে সাক্ষাৎ করেছেন। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে আড়াই ঘণ্টার বেশি সময় ধরে এই বৈঠক হয়।
বৈঠকে ইসলামপন্থী দলগুলোর নেতারা নির্বাচনে অংশ নেওয়ার বিষয়ে তাঁদের আগ্রহের কথা জানান। অনেকেই নিজেদের সংসদ সদস্য হওয়ার বিষয়ে আওয়ামী লীগের সহায়তা চান। জবাবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার পক্ষের ইসলামি শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান এবং আশ্বাস দেন যে নির্বাচন যথাসময়ে সুষ্ঠু ও অবাধভাবে অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠকে ইসলামী ঐক্যজোট, ইসলামিক ফ্রন্ট বাংলাদেশ, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্ট, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলন, বাংলাদেশ মুসলিম লীগ, বাংলাদেশ সুপ্রীম পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট, আশেকানে আউলিয়া ঐক্য পরিষদ এবং জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। বিভিন্ন দলের ১৪ জন নেতা অংশ নেন, তাঁদের মধ্যে ছিলেন আতাউল্লাহ হাফেজ্জী, সৈয়দ সাইফুদ্দীন আহমদ, আবুল হাসনাত আমিনী, মোহাম্মদ ফয়জুল্লাহ, সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী, মিসবাহুর রহমান চৌধুরী, শাহীনূর পাশা চৌধুরী, আলম নূরী, আবুল খায়ের প্রমুখ।
বৈঠকে উপস্থিত সূত্র জানিয়েছে, অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর গৃহীত পদক্ষেপের জন্য ধন্যবাদ জানান ইসলামপন্থী দলের নেতারা। পরে তাঁরা শেখ হাসিনাকে ‘বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম’ লেখা একটি ক্যালিগ্রাফি উপহার দেন।
প্রথম আলোকে দেওয়া এক বক্তব্যে সৈয়দ বাহাদুর শাহ মোজাদ্দেদী জানান, তাঁরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিয়েছেন এবং নির্বাচন সুষ্ঠু ও অবাধ করতে প্রধানমন্ত্রীর সহায়তা চেয়েছেন।
বৈঠকে অংশ নেওয়া বেশির ভাগ দলই সরকারঘেঁষা হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে ইসলামি ঐক্যজোট ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলাম আগে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০–দলীয় জোটের অংশ ছিল, তবে এখন তারা বিএনপির সঙ্গে নেই।
বৈঠকে জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের অন্যতম সহসভাপতি শাহীনূর পাশা চৌধুরী অংশ নেন। তবে দলটির মহাসচিব মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী দাবি করেছেন, দলীয় সিদ্ধান্তে শাহীনূর পাশা গণভবনে যাননি, এটি তাঁর ব্যক্তিগত সিদ্ধান্ত হতে পারে। বিষয়টি দলের নীতিনির্ধারণী ফোরামে আলোচনা হবে।
এর আগে মঙ্গলবার ইসলামপন্থী ছয়টি দল এক বৈঠক শেষে বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছিল, দেশে নির্বাচনের পরিবেশ নেই এবং এমন পরিস্থিতিতে জনমত উপেক্ষা করে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করা সম্ভব নয়।
বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের প্রধান আমির মাওলানা আতাউল্লাহ হাফেজ্জী ওই বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন। বাংলাদেশ মুসলিম লীগের মহাসচিব কাজী আবুল খায়ের ও জমিয়তে উলামায়ে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা বাহাউদ্দীন যাকারিয়া সেখানে উপস্থিত ছিলেন। তবে দুই দিন পরই আতাউল্লাহ, আবুল খায়ের এবং জমিয়তের নেতা শাহীনূর পাশা গণভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেন এবং নির্বাচনে অংশ নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন।