শনিবার, এপ্রিল ১৯, ২০২৫

আফিয়া সিদ্দিকীর প্রত্যাবর্তন ইস্যুতে ইসলামাবাদ হাইকোর্টের উদ্বেগ

by ঢাকাবার্তা
ড. আফিয়া সিদ্দিকী। ফাইল ফটো

ডেস্ক রিপোর্ট ।।

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আনুষ্ঠানিক বন্দি বিনিময় চুক্তি ছাড়াই আটক বন্দিদের হস্তান্তর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ইসলামাবাদ হাইকোর্ট (IHC)।

শুক্রবার আফিয়া সিদ্দিকীর প্রত্যাবর্তনের বিষয়ে দায়ের করা আবেদনের শুনানিতে ফেডারেল সরকার আবেদনটি দ্রুত নিষ্পত্তির অনুরোধ জানায়।

এক্সপ্রেস নিউজের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আদালত সরকারের আবেদনের ওপর নোটিশ জারি করে জবাব চেয়েছে।

বিচারপতি সরদার ইজাজ ইশাক খান প্রশ্ন তোলেন, কোনো আনুষ্ঠানিক বন্দি বিনিময় চুক্তি না থাকা সত্ত্বেও কেন পাকিস্তান দায়েশ কমান্ডার শরীফউল্লাহকে যুক্তরাষ্ট্রের হাতে তুলে দিয়েছে?

অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল (AAG)-কে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, “আপনারা বলছেন কোনো চুক্তি নেই, তাহলে কীভাবে একজন বন্দিকে হস্তান্তর করা হলো?”

আদালত ড. শাকিল আফ্রিদির মামলার প্রসঙ্গও টেনে আনে, যেখানে পাকিস্তান সরকারকে তার সম্ভাব্য যুক্তরাষ্ট্রে হস্তান্তরের বিষয়ে ইন-ক্যামেরা শুনানির সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, তবে সরকারের জবাব অসন্তোষজনক ছিল।

বিচারপতি খান আরও বলেন, সরকার যেন দ্রুত আফিয়া সিদ্দিকীর মামলাটি নিষ্পত্তি করতে চাইছে, যা আন্তর্জাতিকভাবে লক্ষ করা হবে।

তিনি মন্তব্য করেন, “প্রধানমন্ত্রী চিঠি লিখেছেন, ভিসা ইস্যু করা হয়েছে—যা কিছু করা সম্ভব, তা করা হয়েছে। এর মানে কি সরকার এ মামলা থেকে হাত ধুয়ে ফেলতে চাইছে?”

শুনানিতে আবেদনকারী পক্ষের আইনজীবী ইমরান শফিক অ্যাডভোকেট, AAG মুনাওয়ার ইকবাল দুগ্গল, ড. ফওজিয়া সিদ্দিকী এবং যুক্তরাষ্ট্রের আইনজীবী ক্লাইভ স্ট্যাফোর্ড স্মিথ (ভিডিও লিংকের মাধ্যমে) উপস্থিত ছিলেন।

আদালত আগামী শুক্রবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি রাখার পাশাপাশি সরকারের আবেদনের ওপর নোটিশ জারি করেছে।

কীভাবে আফিয়া সিদ্দিকী টেক্সাসে পৌঁছালেন?

ড. আফিয়া সিদ্দিকীর মামলার সূত্রপাত ২০০৩ সালে, ৯/১১ হামলার মূল পরিকল্পনাকারী আল-কায়েদা নেতা খালিদ শেখ মোহাম্মদের (KSM) গ্রেপ্তারের পর।

তৎকালীন প্রতিবেদনে বলা হয়, সিদ্দিকী ছিলেন KSM-এর ভাতিজার স্ত্রী। একই বছর তিনি তিন সন্তানসহ করাচি থেকে নিখোঁজ হন এবং পরবর্তীতে তাকে “লেডি আল-কায়েদা” হিসেবে অভিহিত করা হয়।

২০০৮ সালে তিনি আফগানিস্তানে গ্রেপ্তার হন। তখন তার কাছে সোডিয়াম সায়ানাইড ও যুক্তরাষ্ট্রের লক্ষ্যবস্তুতে হামলার পরিকল্পনা পাওয়া যায় বলে অভিযোগ ওঠে।

জিজ্ঞাসাবাদের সময় তিনি একজন মার্কিন সেনার রাইফেল ছিনিয়ে নিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের লক্ষ্য করে গুলি চালানোর চেষ্টা করেন এবং “আমেরিকার মৃত্যু হোক” বলে স্লোগান দেন বলে দাবি করা হয়। এ সময় তিনি গুলিবিদ্ধ হন এবং পরে নির্যাতনের শিকার হন বলে অভিযোগ ওঠে।

তার এক সন্তান আফগানিস্তানে মুক্তি পেলেও বাকি দুই সন্তানের ভাগ্য এখনও অজানা।

২০১০ সালে তাকে যুক্তরাষ্ট্রে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ৮৬ বছরের কারাদণ্ড দেওয়া হয়, যদিও তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের সরাসরি সম্পৃক্ততার অভিযোগ আনা হয়নি।

 

You may also like

প্রকাশক : মানজুর এলাহী

সম্পাদক : হামীম কেফায়েত

ব‌ইচিত্র পাবলিশার্স
প্যারিদাস রোড, বাংলাবাজার, ঢাকা ১১০০
যোগাযোগ : +8801712813999
ইমেইল : news@dhakabarta.net