যশোর প্রতিনিধি ।।
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যশোরের সমন্বয়ক রাশেদ খানের কক্ষে মাদক সেবনের একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এক মিনিট ৩ সেকেন্ডের ওই ভিডিওটি রাশেদের ভাড়া বাসায় ধারণ করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। রাষ্ট্রসংস্কার আন্দোলনে অংশ নেওয়া বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়কের কক্ষের এমন ভিডিও ছড়িয়ে পড়ায় ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি হয়েছে।
ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা গেছে, রাশেদ একটি চেয়ারে বসে মুঠোফোন চালাচ্ছেন। এ সময় তার সহযোগী মারুফ হাসান সুকর্ণ দাঁড়িয়ে অন্যদের নির্দেশনা দিচ্ছেন। এছাড়াও উপস্থিত কয়েকজনকে বিছানায় বসে বিদেশি মদের বোতল নাড়াচাড়া করতে এবং মেঝেতে কয়েকজনকে মদ খাওয়ার গ্লাস ও ইয়াবা সেবনের প্রণালি প্রস্তুত করতে দেখা গেছে।
তবে ভিডিওটি ভুয়া বলে দাবি করেছেন মারুফ হাসান সুকর্ণ। তিনি বলেন, “যশোরে অনেক সমন্বয়ক সৃষ্টি হয়েছে। নেতৃত্বের প্রতিযোগিতার কারণে আমাদের বিরুদ্ধে কেউ চক্রান্ত করছে। আমি যশোরের বাইরে আছি, ভিডিওটি দেখিনি। যশোরে এসে ভিডিওটি দেখে বলতে পারবো।” এই বিষয়ে জানতে রাশেদ খানের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তা বন্ধ পাওয়া গেছে।
শিক্ষার্থীরা জানান, কোটা আন্দোলনকে ঘিরে সাধারণ শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন রাজনৈতিক সংগঠনের ছাত্র প্রতিনিধিরা সমন্বিতভাবে আন্দোলন শুরু করে। ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পদত্যাগের পর অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এলে যশোরের সমন্বয়ক পদ নিয়ে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। যশোরের প্রধান সমন্বয়ক হিসেবে দাবি করা রাশেদ খানের ভূমিকা নিয়ে আরেক পক্ষ প্রশ্ন তোলে।
রাশেদবিরোধী শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচি পালন না করা, রাশেদের চারপাশে ধান্দাবাজদের আশ্রয়-প্রশ্রয় দেওয়া এবং তাদের কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য নিয়ে সন্দেহ। সমন্বয়ক পরিচয় দিয়ে অনেকেই ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন স্থানে চাঁদা তোলার অভিযোগও করেন তারা। রাশেদবিরোধীরা সংবাদ সম্মেলন করেও এসব অভিযোগ তুলে ধরেন।
সর্বশেষ, গত ৫ সেপ্টেম্বর আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের এক মাস পূর্তি উপলক্ষে ‘শহীদি মার্চ’ পৃথকভাবে পালন করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের দু’পক্ষের নেতাকর্মীরা। এক অংশের নেতৃত্ব দেন যশোর সরকারি এমএম কলেজের শিক্ষার্থী জেসিনা মুর্শীদ প্রাপ্তি, মাসুম বিল্লাহ, নূর ইসলাম; অন্যপক্ষের নেতৃত্ব দেন সমন্বয়ক রাশেদ খান।