ডেস্ক রিপোর্ট ।।
কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আজ সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি জানান, লিবারেল পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন করার পর তিনি দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে সরে দাঁড়াবেন।
জাস্টিন ট্রুডো ২০১৫ সালে লিবারেল পার্টির নেতা হিসেবে প্রথমবার কানাডার প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তার নেতৃত্বে দলটি পরপর তিনবার সরকার গঠন করে। তবে সাম্প্রতিক সময়ে তার সরকারের কার্যকারিতা নিয়ে সংসদে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয় এবং তার নিজের দল থেকেও চাপ বাড়তে থাকে।
ট্রুডো জানিয়েছেন, দীর্ঘ পারিবারিক আলোচনার পর তিনি এই সিদ্ধান্তে পৌঁছেছেন। রবিবার রাতে পরিবারের সঙ্গে নৈশভোজের সময় তিনি সন্তানদের এই সিদ্ধান্তের কথা জানান। তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি কানাডার রাজনীতিতে নতুন সূচনার দাবি করছে।
পদত্যাগের এই ঘোষণার পেছনে বিরোধীদের সমালোচনা এবং দলের ভেতর থেকে আসা চাপ বড় ভূমিকা রেখেছে। বিশেষ করে সাবেক অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগের পর পরিস্থিতি আরও তীব্র হয়। ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ড এবং সাবেক কেন্দ্রীয় ব্যাংকার মার্ক কারনির নাম ট্রুডোর সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে আলোচিত হচ্ছে।
কানাডার পার্লামেন্টের কার্যক্রম আগামী ২৪ মার্চ পর্যন্ত স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। এর মধ্যে লিবারেল পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন করবে।
২০২১ সালে তৃতীয়বারের মতো জয়ী হয়ে ট্রুডোর নেতৃত্বে সরকার গঠিত হলেও তার জনপ্রিয়তা কমতে শুরু করে। দেশজুড়ে অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ, বিরোধীদের সমালোচনা এবং সরকারের নীতিনির্ধারণী সিদ্ধান্তে দলের ভেতরেও ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। নতুন নির্বাচনের আগে ট্রুডোর সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত লিবারেল পার্টির জন্য গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন বয়ে আনতে পারে।
পদত্যাগের কারণ
ট্রুডো বলেন, “কানাডার জনগণ এবং দেশের জন্য নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজন। রাজনৈতিক অচলাবস্থা এবং উৎপাদনশীলতার ঘাটতি কাটিয়ে উঠতে এটি জরুরি।”
আগামী অক্টোবরের মধ্যে কানাডায় নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। তার আগে লিবারেল পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন করে দলকে ঐক্যবদ্ধ করার চেষ্টায় থাকবে।
পদত্যাগের পটভূমি
সম্প্রতি অর্থমন্ত্রী ক্রিস্টিয়া ফ্রিল্যান্ডের পদত্যাগ এবং বিভিন্ন অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক সংকট ট্রুডোর ওপর চাপ বাড়িয়েছে। পার্লামেন্টে বারবার বিল পাসে ব্যর্থ হওয়া, অর্থনৈতিক মন্দার মুখে রাজনৈতিক সমালোচনা এবং নেতৃত্বের নতুন চাহিদা তাকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য করেছে।
কানাডার রাজনীতিতে এই পদত্যাগ একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড় হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। এখন দেখার বিষয়, লিবারেল পার্টি নতুন নেতৃত্বে কেমন করে এগিয়ে যায় এবং আগামী নির্বাচনে তাদের অবস্থান কী হয়।